সড়কের নিরাপত্তা এবং সংলগ্ন বাজারসমুহের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার
লক্ষ্যে জাউয়াবাজারে হাইওয়ে পুলিশের ক্যাম্প স্থাপন
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার প্রাচীনতম বাণিজ্যকেন্দ্র জাউয়াবাজারে হাইওয়ে পুলিশের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প বা পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে অব্যাহত ঘন ঘন সড়ক দূর্ঘটনা হ্রাস, নানামুখী প্রতিবন্ধকতা অপসারণপূর্বক যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা, যাত্রী সাধারণ, পথচারী ও স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোপরী সরকারি সম্পত্তি জবরদখল মুক্ত রাখার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অস্থায়ী হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের নির্মাণকাজ শুরুর প্রাক্কালে গত ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে তা পরিদর্শনে যান হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসপি) মোঃ রেজাউল করিম। এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান, এই আঞ্চলিক মহাসড়কের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত জয়কলস হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমার চৌধুরীসহ অন্য কর্মকর্তারা।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাইওয়ে পুলিশের এসপি বলেন, ‘আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন, গত ২/৩ দিন থেকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জেলার অধীন থানা পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশ মিলে সিলেট-সুনামগঞ্জ ৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ আঞ্চলিক মহাসড়কের উভয়পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ এবং অপসারণ করেছি। কিন্তু আপনারা দেখেছেন এবং জানেনও আমাদের দেশের কিছু মানুষের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতা রয়েছে। ঠিক একই কারণে একদিকে আমরা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে চলে যাওয়ার পর পরই আইন অমান্যকারীরা আবারও মহাসড়কের উভয়পাশের সরকারি সম্পত্তি জবরদখল করে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করতে শুরু করে। একটি হাইওয়ে পুলিশের থানার পক্ষে এতো দীর্ঘ সড়কে নজরদারী করা কষ্টসাধ্য। তাছাড়া আমাদের লজিস্টিকস (যানবাহন) সাপোর্ট এবং জনবলেরও কিছুটা ঘাটতি রয়েছে।
আইন না মানার প্রবণতা প্রতিরোধে এবং হাইওয়ে পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারী রাখতে এই আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রাচীনতম এবং বিখ্যাত বাণিজ্যকেন্দ্র জাউয়াবাজারে হাইওয়ে পুলিশের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প বা পুলিশ বক্স নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেই। তারই ধারাবাহিকতায় এই ক্যাম্প নির্মাণ চলছে। ভূমিটি যেহেতু সড়ক ও জনপথের। আগামীতে যে কোন সময় মহাসড়ক প্রশ্বস্তকরণ বা অন্য কোন কারণে তাদের প্রয়োজন পড়তে পারে। এই চিন্তা করে আমরা আপাতত টিনশেড আকারে ছোট পরিসরে অস্থায়ী পুলিশ বক্স স্থাপন করছি। আগামীতে সুযোগ পেলে বা ভূমির ব্যবস্থা হলে স্থায়ীভাবে ক্যাম্প বা পুলিশ বক্স নির্মাণের চেষ্টা করা হবে।
তিনি বলেন, জাউয়াবাজারসহ সড়কের প্রতিটি বাজার ব্যবস্থাপনা যাতে শৃংখলার মধ্যে থাকে, সে লক্ষ্যে পুলিশী নজরদারি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশ যাতে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নিয়ে ক্লান্তি দূর করতে পারে, এ বিষয়টি চিন্তা করেই আমি এই পুলিশ বক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি প্রতিটি বাজার পরিচালনা কমিটি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পরিবহন শ্রমিক প্রতিনিধি, কমিউনিটি পুলিশসহ সবাইকে নিয়ে বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য সুন্দর কমিটি গঠনের আশ্বাস দেন। শৃংখলার মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
স্থানীয় জাউয়াবাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন ও অর্থ সম্পাদক শোয়েব আহমদসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং অন্য টেকহোল্ডাররা হাইওয়ে পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিশেষ করে তারা পরিবহন শ্রমিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, চলতি পথে যাতে অন্যদের কোন প্রকারের অসুবিধা না হয়, সে লক্ষ্যে পরিবহন শ্রমিকদের গাড়ি পার্কিং করতে হবে।
তারা হাইওয়ে পুলিশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে আরও বলেন, হাইওয়ে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পটি চালু হলে মহাসড়কে টহল কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ, যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply