গোলাম রব্বানী শিপন,বগুড়া : বগুড়ার মহাস্থানে পিতার ওপর অভিমানে আহসান হাবিব (১৮) নামের এক কলেজ ছত্রের আ/ত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ সে শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের গড়মহাস্থান উত্তরপাড়া গ্রামের ইউনূস আলীর পুত্র। মৃত হাবিব বগুড়া কলেজের প্রথম বর্ষের মেধাবী ছাত্র ছিলেন৷
সরেজমিনে গিয়ে নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মহাস্থান পাইকারি সবজি হাটে প্রতিদিন শরবতের ব্যবসা করেন সদ্য মৃত হাবিবের পিতা ইউনুস আলী। তাদের ১ ছেলে আর ১ মেয়ে নিয়ে সংসার। ছেলে মেয়ের মধ্যে হাবিবই ছিল বড়। ছোটকাল থেকেই হাবিব তার নানীর বাড়ি মাটিডালি এলাকা থেকে পড়ালেখা করে সেখানেই বড় হয়েছেন। এবার কুরবানির ঈদ বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে কাটাতে বাড়ীতে এসেছেন হাবিব। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার সকাল ১১টায় হাবিবের মা তার ননদের বাড়ী সদরের গোকুল ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামে দাওয়াতে যান। বিকালে হাবিব পিতার শরবতের দোকানে গেলে তার পিতা বাড়ি থেকে ফ্রিজে রাখা বেশ কয়েকটি বরফে জমা পানির বোতল আনার জন্য বলেন। কিন্তু হাবিব সম্ভাব্য সময়ে দোকানে পানি নিয়ে যায়নি। একপর্যায়ে বিকালে হাবিবের পিতা ইউনূস আলী সে নিজেই বাড়ীতে আসেন দোকানের শরবত তৈরীর বরফ পানী ফ্রিজ থেকে নিতে। পানি নিয়ে সে বাড়ীর পাশে একটি দোকানে দেখতে পান হাবিব বন্ধুদের সঙ্গে ক্যারাম বোর্ড খেলছেন। এসময় তার পিতা ইউনূস আলী তাকে ডেকে বলেন, এখানে আড্ডা দিচ্ছো আর আমাকে নিজেই আসতে হলো পানি নিতে। এই বলে বকাঝকা করে রগচটে চলে যান। এরপর হাবিব পিতার ওপর অভিমান করে বাড়িতে গিয়ে মনের ক্ষোভে তার শয়ন কক্ষের তীরের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
সন্ধ্যায় পিতা ইউনূস কর্মস্থল থেকে ফিরে এসে দেখেন বাড়ি অন্ধকার। হাবিব হাবিব করে ডেকেও সাড়া নেই। পরে হাবিবের রুমে ডাকাডাকি করেন। তাতেও সাড়া মেলে না। এরপর হাবিবের চাচী নান্নুর স্ত্রী ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে পান হাবিবের ঝুলন্ত মরদেহ। এরপর তিনি চিৎকার দিয়ে উঠলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। পরে সংবাদ পেয়ে শিবগঞ্জ থানার এসআই ব্রজেন মোহান্ত সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ ওই কলেজ ছাত্রের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবগঞ্জ থানার এসআই ব্রজেন মোহান্ত। এদিকে হাবিবের মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের মাতম চলছে।
Leave a Reply